জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা কর্মচারীরা আবার কেন আন্দোলনে?

সরকারি কর্মচারীরা আন্দোলন করলে ভাল দেখায় না। সাধারণ মানুষও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভাল চোখে দেখে না। তাদের ধারণা, নিজেদের সুযোগ সুবিধার ঘাটতি হলে কিংবা ক্ষমতা কমে যাওয়ার আশংকা দেখা দিলেই কেবল গোষ্ঠী স্বার্থ রক্ষার জন্য তারা আন্দোলন করে। দেশের ভালমন্দকে সরকারি কর্মচারিরা অগ্রাধিকার দেয় না। ফলে যখনই এরকম আন্দোলন হয়, অন্তর্নিহিত কারণ অনুসন্ধান না করে মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচুর বিরূপ মন্তব্য করে থাকে।

যে আশা ও বিশ্বাস নিয়ে কর্মসূচি প্রত‍্যাহার

কিন্তু গত মে মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী যখন সরকারের জারিকৃত রাজস্ব নীতি ও ব‍্যবস্থাপনা অধ‍্যাদেশ প্রত্যাহার করার দাবীতে আন্দোলন শুরু করে, তখন প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু মানুষ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালেও দেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবীর পক্ষে দেশের খ‍্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, রাজস্ব বিশেষজ্ঞ, সংস্কার কমিটির সদস্যবৃন্দ ধারাবাহিক বক্তব্য প্রদান করায় ক্রমশ গণমানুষের বিপুল সমর্থন লাভ করে। সিপিডি, টিআইবি, সানেমসহ বেশিরভাগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান পর্যাপ্ত পরামর্শ, আলাপ আলোচনা ব‍্যতীত তড়িঘড়ি করে অধ‍্যাদেশ জারির বিষয়টি ভাল হয়নি এবং কাস্টমস, আয়করের বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তাদের বদলে জেনারেলিস্টদের হাতে রাজস্ব পলিসি তুলে দেওয়ার উদ্যোগ কেউই সমর্থন করেননি। ফলে এনবিআর সংস্কার ঐক‍্য পরিষদের দাবীর মুখে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তর ২৫ মে তারিখে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ঘোষণা করে যে, এনবিআর বিলুপ্ত করা হবে না, বরং একে  একটি বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে; রাজস্ব নীতি প্রণয়নের জন্য একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গঠন করা হবে; সব পক্ষের সাথে আলোচনা করে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অধ‍্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে এবং সে পর্যন্ত এর বাস্তবায়ন স্থগিত থাকবে। সরকারের এই ঘোষণার পর এনবিআর সংস্কার ঐক‍্য পরিষদ সব কর্মসূচী প্রত্যাহার করে কাজে যোগদান করে।

জুন: বিশ্বাসভঙ্গ

কুরবানির ঈদের পর এনবিআর সংস্কার ঐক‍্য পরিষদ কেমন এনবিআর চাই শীর্ষক একটি সেমিনার আয়োজন করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েই তারা ব‍্যস্ত হতে চেয়েছিল। কিন্তু এনবিআর চেয়ারম‍্যান তাদেরকে আবার আন্দোলনে ঠেলে দেন তার নিম্নোক্ত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে-

(১) এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনদের নিয়ে তাদের পূর্বঘোষিত ‘কেমন এনবিআর চাই’ শীর্ষক সেমিনার আয়োজনের লক্ষ্যে অফিস সময়ের পর প্রস্তুতিমূলক সভা আয়োজনের জন্য কক্ষ বরাদ্দ চেয়ে প্রথমে মৌখিকভাবে ও পরে লিখিত পত্র প্রদানের পরও কক্ষ বরাদ্দ প্রদান করা হয়নি। এমনকি, কক্ষ বরাদ্দ চেয়ে দেওয়া চিঠি তিনি ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন মর্মেও জানা যায়। ফলে, ০২, ১৯ ও ২১ জুন, ২০২৫ খ্রিঃ তারিখে রাজস্ব ভবনের নীচ তলার মেঝেতে ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সভাগুলো করা হয়। অন্যদিকে, সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকা সত্ত্বেও রাজস্ব ভবন ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার ব্যবস্থা করে এক ধরনের উস্কানিমূলক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে।

(২) এনবিআর কর্তৃক গত ১৯ জুন, ২০২৫ খ্রিঃ তারিখে রাজস্ব অধ্যাদেশ সংশোধনের লক্ষ্যে এনবিআরের ট্যাক্স এবং কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের ছয় জন সদস্য সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু এই কমিটিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কোনো প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, এমনকি কমিটি গঠন বিষয়ে তাদের সাথে কোনোরূপ আলোচনাও করা হয়নি। আবার, এনবিআর চেয়ারম্যান মহোদয় বিভিন্ন সভায় ও বক্তব্যে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের বৈধতা ও অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন।

(৩) যে রাজস্ব অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে এতদিন কর্মসূচি চলেছে, তা জারি হওয়ার পর যে বা যারা একে স্বাগত জানিয়ে পত্রিকায় ও ফেসবুকে বক্তব্য দিয়েছিলেন, এমন বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ ও অধ্যাদেশ সংশোধনের বিরোধী-মনোভাবসম্পন্ন এনবিআরের সদস্য(গণ)কে গঠিত কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আবার, এই কমিটিতে অধিকাংশ সাধারণ সদস্যগণের মতামতের ভিত্তিতে বিলুপ্ত বিসিএস (ট্যাক্সেশন) এসোসিয়েশনের সভাপতিকে এনবিআরের ছয় সদস্যের মধ্যে দ্বিতীয় কনিষ্ঠতম সদস্য হওয়া সত্ত্বেও কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী হিসাবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এটি করা হয়েছে, যাতে সবকিছু চেয়ারম্যান তাঁর পছন্দের লোক দিয়ে সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে পারেন।

(৪) তিনি সম্প্রতি বদলী নীতিমালার তোয়াক্কা না করে আয়কর বিভাগের সিনিয়র কমিশনারকে প্রতিহিংসামূলকভাবে নিপীড়নমূলক বদলী করেছেন। আবার, সরকারি কর্মকর্তাগণের জন্য স্পর্শকাতর দপ্তরে প্রশ্নবিদ্ধ এক কর্মকর্তাকে কর কমিশনারের দায়িত্ব দিয়েছেন।

(৫) তিনি একটি দোসর সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাইরে থেকে লোক জড়ো করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে উস্কানিমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন। এছাড়া, কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাগণকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন, শাস্তি ও বদলির হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। এসব প্রতিহিংসামূলক কর্মকান্ডের কারণে স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে, যার প্রভাব রাজস্ব আহরণেও পড়তে পারে।

(৬) গত ২১ ও ২২ জুন, ২০২৫ খ্রিঃ তারিখে একাধিক আদেশের মাধ্যমে রাজস্ব সংস্কার কর্মসূচির সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণকে প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক বদলি করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি আদেশে অত্যন্ত দক্ষ ও পেশাদারি হিসাবে সুনাম রয়েছে এবং কর্মসূচিতে সম্মুখ সারি থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এমন পাঁচজন আয়কর কর্মকর্তাকে ঢাকার বাইরে অপেক্ষাকৃত কম রাজস্ব সম্ভাবনাময় দপ্তরে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। উক্ত আদেশে প্রাপ্য যোগদানকাল না দিয়েই পরবর্তী কর্মদিবসে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগদান করতে বলা হয়েছে, যা চাকরি বিধির সম্পূর্ণ পরিপন্থি ও অবৈধ। এই অবৈধ আদেশ বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত জিঘাংসা চরিতার্থের এক জলজ্যান্ত প্রমাণ। এর মাধ্যমে যৌক্তিক কর্মসূচিতে থাকা কর্মকর্তাদের পুঞ্জিভূত ক্ষোভকে উস্কে দিয়ে তিনি পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চান। তাঁর এহেন কর্মকান্ড অত্যন্ত দুরভিসন্ধিমূলক।

(৭) তিনি বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক সভা ও বক্তব্যে বিভিন্নভাবে বলেছেন যে, তিনি এনবিআরকে বিলুপ্ত করবেন এবং রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুই বিভাগের মডেলই রাখবেন। অর্থাৎ, জারিকৃত অধ্যাদেশে তেমন কোনো পরিবর্তনই তিনি হতে দিবেন না। সরকারের প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি বা এনবিআরের কমিটি গঠন, এগুলো সবই তাঁর আইওয়াশ। এ থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট, যে ইস্যুকে কেন্দ্র করে এই কর্মসূচি তাকে জিইয়ে রেখে সামগ্রিক পরিস্থিতিকে তিনি অস্থিতিশীল করতে এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে দায়িত্বে রেখে রাজস্ব সংস্কার সম্ভব নয়, কারণ তিনি এটি বাস্তবায়ন হতে দিবেন না।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ পুনরায় তিন ঘণ্টা করে কলম বিরতি ও এনবিআরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

নজিরবিহীন দমন পীড়ন

এনবিআরের ইতিহাসে নজিরবিহীন এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন নজিরবিহীন উপায়ে দমনের চেষ্টা চলছে। গত বৃহস্পতিবারের ঘটনা আগুনে ঘি আরও বেশি ঘি ঢেলেছে।

বৃহস্পতিবার ১২ টার দিকে এনবিআরের সকল গেইট বন্ধ করে দেয়া হয়। গেইটের সামনে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেয়। কাউকে ঢুকতে কিংবা বের হতে দেয়া হয়নি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একজন সদস‍্য অন‍্য দপ্তরের সভায় যোগদান করে ফিরে এসেও ঢুকতে পারেননি। প্রথম সচিবসহ এনবিআর ভবনেই যাদের অফিস এমন অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।

অন‍্যান‍্য দপ্তর থেকে আসা কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী এনবিআর ভবনের বাইরে এসে অবস্থান নেন। শত শত নারী কর্মকর্তা-কর্মচারী রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে সারাদিন বাইরে থাকতে বাধ্য হন। তাদেরকে ওয়াশরুম ব্যবহার করতেও ভেতরে যেতে দেয়া হয়নি।

আলোচনার নামে প্রহসন

২৫ জুন ২০২৫ খ্রি. তারিখে অর্থ উপদেষ্টা মহোদয় ২৬ জুন ২০২৫ খ্রি. তারিখ বিকাল ৫ টায় বিসিএস (কর) ও সিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের প্রতিনিধিগণকে তাঁর সাথে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন মর্মে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। ঐক্য পরিষদ দাবী করেছে যে, তারা বরাবরই আলোচনার পক্ষে, আর এজন্যই গত ২০ মে, ২০২৫ খ্রি. তারিখে উপদেষ্টা মহোদয়ের সঙ্গে তারা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু তাদের সেই আলোচনার অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। ৫৫ মিনিটের সভায় তাদের কথা বলতে দেয়া হয় মাত্র ১০ মিনিট এবং তাদের দাবী মানা সম্ভব নয় বলে এক প্রকার অপমান করে সেই সভা শেষ করা হয়। 

এ অবস্থায় ২৬ তারিখের আলোচনার প্রস্তাবের বিষয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের বক্তব্য হলো যেহেতু সরকার ২৫ মে ২০২৫ খ্রি. তারিখে জারিকৃত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে বিলুপ্ত না করে বরং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারের একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করার অবস্থান থেকে সরে এসেছে এবং যেহেতু এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিগণকে আগামীকাল ২৬ জুন ২০২৫ খ্রি. তারিখে অনুষ্ঠিতব্য আলোচনার জন্য আহ্বান করেননি, সেহেতু কর্মসূচী পালনকারী এনবিআর ঐক্য পরিষদ থেকে কোনো প্রতিনিধি উক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ না রাখায় উক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করবে না মর্মে ঐক্য পরিষদ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং ২৭ তারিখের মধ্যে চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করা হলে ২৮ তারিখ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীন কর, কাস্টমস ও ভ্যাটের সকল দপ্তরে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেয়া হয়।

২৬ তারিখ রাতে এনবিআরের চেয়ারম‍্যানের উপস্থিতিতে বোর্ডের সকল সদস‍্যদের সাথে অর্থ উপদেষ্টা মহোদয় বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠক সফল হয়েছে। সমস‍্যার সমাধান শিগগিরই হবে। তবে কোন দাবী পূরণের বিন্দুমাত্র আশ্বাস দেয়া হয়নি। বরং এনবিআর থেকে ভীতি প্রদর্শন করে আদেশ জারি করা হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে আজ সারা দেশ থেকে কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের সকল অফিস বন্ধ করে কর্মকর্তা কর্মচারীরা এনবিআরের সামনে চলে এসেছে। বৃহস্পতিবারের মতই পুলিশ কাউকে ভেতরে যেতে দেয়নি। মানুষ রাস্তায় ফুটপাথে বসে দাঁড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছে। দাবি আদায় হলেই সবাই কাজে ফিরবে।

“সিভিল সার্ভিস তো পারলে সবই নিয়ে নেয় ওদের, ওদেরকে তো আমি বারিত করেছি”- মাননীয় অর্থ উপদেষ্টার এই সরল স্বীকারোক্তির মধ‍্যেই হয়তো নিহিত আছে সকল সংকটের আসল কারণ।

সুত্র : আক্তার হোসেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *